পড়াশোনাকে কখনো বোঝা ভেবো না: পড়তে বসার ইচ্ছাই করে না আর যদিও বা কোন সময় জোর করে পড়তে বসি অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই অস্বস্তি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু অন্য সব জিনিস গুলোতে খুব মন বসে সেখানে ভালই টাইম কেটে যায়।
মোবাইল বন্ধু বান্ধব এগুলো নিয়েই সারাদিন সময় কেটে যায়। লাইক ,নোটিফিকেশন, গেম এগুলোই এখন দুনিয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তুমি তোমার অজান্তেই ধীরে ধীরে এগুলোর গোলাম হয়ে যাচ্ছ। সারাটা দিন এগুলোর মধ্যেই তুমি ফেঁসে থাকো। কিন্তু সময় তোমার জন্য অপেক্ষা করবে না সেটা বাড়তেই থাকবে। আর হঠাৎ একদিন দেখবে ফাইনাল এক্সাম দেওয়ার সময় চলে এসেছে। তুমি তখন ভীষণ চেষ্টা করবে কিছুদিন অনেক পরিশ্রম করবে এবং বিভিন্ন শর্টকাট খুঁজে কোনো না কোনোভাবে পাস করে যাবে।
আর প্রতি বছর এভাবে টেনেটুনে পাস করতে করতে যখন তুমি জীবনের রেসে যোগ দেবে তখন তোমার অবস্থা খুবই শোচনীয় হবে। যখন তোমার স্কুলের একটা ক্যাবলা ছেলে তোমার থেকেও অনেক আগে এগিয়ে যাবে তখন তুমি শুধু আফসোসই করতে থাকবে। একটা ভালো স্টুডেন্ট না হওয়ার কারণে সারা জীবন তোমাকে অনেক কিছুই কম্প্রোমাইজ করে চলতে হবে।
একটা ছোটখাটো চাকরি জোগাড় করতেও তোমাকে অনেক ঘাম ঝরাতে হবে। আর বার বার তখন শুধু এটাই মনে হবে যে আরো একটু ভালো মাক্স নিয়ে যদি পাশ করতাম তাহলে হয়তো এই সময়টা আজ আসতো না। তবে সেই সময়টা এখনো তোমার জীবনে আসেনি।
সুতরাং আজি সিদ্ধান্ত নাও সারা জীবন আফসোস করে কাটাতে চাও নাকি ভবিষ্যতে বড় কিছু করে দেখাতে চাও সিদ্ধান্ত তোমাকেই নিতে হবে। আজ তুমি বাবা মায়ের সাহারাই আছো তবে ভবিষ্যতে যদি তুমি তাদেরকে সাহারা দিতে চাও তাহলে তার জন্য অনেক বড় হতে হবে।
সারা জীবন তুমি শুধু অন্যের সফলতা দেখে যাবে নাকি, নিজেও কখনো সফল হয়ে দেখাবে চয়েজ সেটা তোমার। কখনো এটা ভেবোনা যে তোমাকে দিয়ে হবে না। যদি তোমার ক্লাসে কিছু ছেলে করতে পারে তাহলে তুমিও করতে পারবে। একটা স্কুল টপার সেও তোমার মত একই মানুষ শুধু পার্থক্য এটাই সে পড়াশোনা করে ক্লাসে টপ করার জন্য। আর তুমি পড়াশোনা করো কোনভাবে একটু পাশ হয়ে যাওয়ার জন্য। সে পড়াশোনা করে তার জীবনের একটি লক্ষ্য পূরণ করার জন্য। আর তুমি পড়াশোনা করো কোন ভাবে একটু কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য।
এই পার্থক্য গুলোই তাকে একটি টপার আর তোমাকে একটি এভারেজ স্টুডেন্ট বানিয়ে দেয়। কারণ সে জানে পড়াশোনা এমন একটি রাস্তা যেটা তাকে তার লক্ষ্য পর্যন্ত যাওয়ার জন্য অনেকটাই সাহায্য করবে।
মোবাইল একটা প্রয়োজনীয় জিনিস কিন্তু সেটাকেই তোমার সমস্যার কারণ বানিও না। দরকার এর জন্য সেটাকে ব্যবহার করো। কিন্তু সেটাই শুধু তোমার দরকার এ রকমটা হতে দিওনা। মোবাইল তো আজ সবার কাছেই আছে। একটা টপার এর কাছেও মোবাইল আছে আর তোমার কাছেও মোবাইল আছে। পার্থক্য শুধু এটাই সে পড়াশোনার কাজে সেটাকে বেশি ব্যবহার করে। আর তুমি তোমার মনোরঞ্জনের জন্য এটাকে বেশি ব্যবহার করো। তার মোবাইলে পড়াশোনা করার অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল থাকে। আর তোমার মোবাইলে টাইম পাস করার অ্যাপ্লিকেশন। সে পড়াশোনা শেষ হলে মোবাইল দেখা শুরু করে। আর তুমি মোবাইল দেখা শেষ হলে তবে পড়াশোনা করো। পড়াশোনাকে কখনো বোঝা ভেবোনা।
কারণ এটা তোমার কাছে একটা সুযোগ নিজের ভবিষ্যতকে আরও সহজ করার জন্য। আর এই সুযোগটিকে তুমি আজ সঠিক ভাবে ব্যবহার করো তাহলে তোমার ভবিষ্যত আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। পড়াশোনাকে তুমি আজ সমস্যা মনে করে তাহলে তুমি ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়বে। পড়াশোনাকে তুমি কখনো বোঝা ভেবোনা। কারণ এটা তোমার জীবনে পাওয়া একটা বড়ো সুযোগ। আর ফালতু টাইম পাস করতে গিয়ে যদি তুমি এই সুযোগটিকে হাতছাড়া করে ফেলো ভবিষ্যতে তোমাকে তার অনেক বড়ো মূল্য চোকাতে হবে। গোটা জীবনটাই একটা রেস। আর এই জীবনের প্রতিটি মোড়ে কেউ না কেউ তোমাকে হারানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। সুতরাং এই রেসে যোগ দেওয়ার আগে তুমি নিজেকে আরও প্রস্তুত করে নাও। এই সুযোগটিকে তুমি কাজে লাগাও।