মোবাইল ফোন আসক্তি কমাতে যা করবেন: তুমি চাইছো জীবনে বড় কিছু করার। তুমি চাইছো জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ার। তুমি চাইছো প্রতিদিন উঠতে সকালে আর তখনি তুমি মোবাইল স্কিনে তাকালে। ছিল না সেটা ইমপোরটেন্ট নটিফিকেশন ছিল সেটা পুরনো দিনের এডিকশোন। যেটা দিতে থাকে তোমায় বাঁধা নিতে কোন অ্যাকশন। একটা ডিভাইজ যেটা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না সঠিক সময়ে। একটা ডিভাইজ যেটা তোমাকে উঠতেও দেয় না সঠিক সময়ে। একটা ডিভাইজ যেটা প্রতিদিন তোমার সময় চুরি করছে।
আর তোমারি অজান্তে তোমারি সময়কে নিজের পকেটে ভরছে। আজ আমরা বন্দি এক জালে। জাল সোশ্যাল মিডিয়া জাল অনলাইন গেমে জাল অপ্রয়োজনীয় নটিফিকেশনে জাল ইন্টারনেট সার্ফিংএ এবং সবার থেকে বড় জাল স্মাট ফোনে। যেটা স্মাট হওয়ার সত্বেও আমাদের প্রতিদিন স্টুপিট বানাচ্ছে। তোমার কি মনে হয় স্টিভ জোবস আইফোন ইনভেন্ট করে সারা দিন আইফোন নিয়ে বসে থাকতো। নাকি তোমার মনে হয় মার্ক জাকারবার্গ প্রতিদিন ফেইসবুকে অ্যানজেল প্রিয়ার সাথে চ্যাট করে তার মূল্যবান সময় নষ্ট করে।
তোমার কি মনে হয় জ্যাং কং সর্বদা হোয়াটসআপে অন্যের লাস্ট সিন চেক করে। নাকি ইলোন মাস্ক তার পেপাল গে টুয়ে দিলে অনলাইনে শপিং করে। আজ বেশীর ভাগ আবিষ্ককর্তারা প্রতিদিন এটা আরও ঘনিষ্ঠ জালে রুপান্তরিত করছে যেটা তোমার সুক্ষ মস্তিস্ককে ব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট। তুমি কি জানো তোমার জানতে অজান্তে তুমি কত বার নিজের ফোন চেক কর। ২০১৬ এর রিচার্স অনুযায়ী একজন স্মাট ফোন ইউজার গড়ে দিনে ২৬১৭ বার তার ফোন চেক করে। কিন্তু এটা ছিল ২০১৬ এর রিচার্স বর্তমানে এটা প্রায় ৮০০০ হাজারের ও বেশীতে দাঁড়িয়েছে। আজ এই স্মাট ফোন মানুষের চোখের ঘুম কেড়েছে। কারণ ৯৫% স্মাট ফোন ইউজার প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে তার স্মাট ফোনে নিজের সময় নষ্ট করতে ভুলে না।
একটা এভারেস স্মাট ফোন ইউজার কমপক্ষে তার দিনের পাঁচ ঘন্টা এই স্মাট ফোনেই নষ্ট করে। যেটাকে হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রতি সপ্তাহে ৩৫ ঘন্টা। প্রতি মাসে এক সপ্তাহ। প্রতি বছরে ৭৬ দিন। আর এই ভাবেই একটা এভারেস মানুষের জীবনে প্রায় দশ বছর কেড়ে নেয় এই স্মাট ফোন। শুধু এখানেই শেষ নয় এই স্মাট ফোন শুধুমাত্র তোমার সময় কেড়ে নিচ্ছে না বরং কেড়ে নিচ্ছে তোমার কাছ থেকে তোমার বেঁচে থাকার কারণ। তোমার বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য।
এমনকি তৈরি করছে তোমার কাছের মানুষের সাথে দুরত্ব। এটা খুবই দুর্ভাগ্য জনক যে ডিভাইসের সৃষ্টি করা হয়েছিল মানুষের দুরত্ব কমাতে আজ সেই ডিভাইসটাই সাহায্য করছে মানুষের দুরত্ব বাড়াতে। আজ আর একসাথে পাশে বসে থেকেও একসাথে থাকা হয় না। চোখ থাকে মোবাইল স্কিনে একসাথে বাঁচা হয় না। একসাথে কোথাও ঘুরতে গেলে ঘুরার অনুভূতি হয় না। কিন্তু সেলফি তুলে না পোষ্ট করলে মন সন্তুষ্টি পায় না। আজ হারিয়ে গিয়েছে মাঞ্জায় দেওয়া সুতো আর কাগজের ঘুড়ি। আজ হারিয়ে গিয়েছে বিকেলে খেলতে যাওয়া লাটিম আর দড়ি। মাঠের খেলা হারিয়ে যাচ্ছে মোবাইল গেমে। প্রাণের ফুর্তি ফুরিয়ে যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার মিমে। আজ তোমাকে নির্ধারণ করতেই হবে তুমি কি চাইছো তোমার জীবনে।
কেননা এই নেশার খেলা চলতেই থাকবে আজীবন গোপনে। যার জীবনে প্রকৃত স্বপ্ন নেই। যার জীবনে প্রকৃত উদ্দেশ্য নেই সে এটাকে গ্রহণ করবে তার হতাশা কাটাতে। তাহলে তুমিও কি তাদের দলে নাম লেখাতে চাইছো যারা স্বপ্ন শুধুই দেখে পূরণ করতে পায় ভয়। কামাতে চায় তারা লাখে বিশ্বাস তাদের লাকে অথচ পরিশ্রম নয়। একটা ডিভাইস কখনো তোমাকে কন্ট্রোল করতে পারে না। এটা তোমার মানসিকতা আর দীর্ঘদিনের অভ্যাস। কারণ একমাত্র তোমার মানসিকতাই পারে তোমাকে দিয়ে কাজ করাতে এবং তোমার অভ্যাসে পারে এটাকে আরও মজবুত বানাতে। কিন্তু প্রশ্ন হলো তুমি কোন ধরণের অভ্যাসকে আপন করছো। যদি তোমার লক্ষ্য হয়ে থাকে উন্নতি পূর্ণ সকল বাঁধাকে তুমি করতে পার অনায়াসে চূর্ণ।